বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে জন্ম গ্রহণ করার প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হিসেবে আমরা যে সনদটি পেয়ে থাকি তা হলো জন্ম নিবন্ধন সনদ। যদিও অনেকেই অসচেতনতার কারণে বাচ্চার জন্মের অনেকদিন পার হয়ে গেলেও জন্ম সনদ তৈরী করেন না। এটা মোটেও ঠিক নয়।
বাংলাদেশে জন্ম সনদ প্রক্রিয়াটি অবশ্য খুব বেশি পুরনো নয়। প্রথম যখন জন্ম সনদ প্রবর্তন করা হয় তখন সব বয়সী মানুষের একসাথে নিবন্ধন করে ফেলা হয়। এর পর থেকে নতুন বাচ্চা জন্মগ্রহণ করা হলে তাদের নিবন্ধন করা হয়।
জন্ম সনদ নিবন্ধনের প্রাথমিক পর্যায়ে হাতে লিখে সনদ তৈরী করা হতো। আবার এই তথ্য ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের তথ্য বইতেও সংরক্ষণ করা হতো। ফলে একই তথ্য একবার সনদে আরেকবার তথ্য বইতে উঠাতে গিয়ে যথেষ্ট ভুলভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। আবার, জন্স সনদ করার সময় এমন অনেক লোকদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল যাদের হাতের লেখা এতটাই অস্পষ্ট যে কি লিখা আছে তা ঠিক মতো বুজাই যেত না। এর মাঝে আবার সরকার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য গুলোকে ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে তথ্য বইতে সংরক্ষিত ডাটাগুলোকে অনলাইন ডাটাবেজে সংরক্ষণ করার পদক্ষেপ হাতে নেয়। কিন্তু জন্ম সনদের তথ্য অনলাইন ডাটাবেজে সেভ করার সময় আবার অনেকের তথ্যই ভুল ভাবে লেখা হয়। এর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল অস্পষ্ট লেখার কারণে অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করা লোকদের বুজতে অসুবিধা হতো। মূলত এই কারণেই অনেকেরই জন্ম সনদের সাথে অনলাইন ডাটাবেজে সংরক্ষিত তথ্যের ভিন্নতা লক্ষিত হয়।
আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদেও এ ধরনের জটিলতা রয়েছে কিনা তা অবশ্যই আপনার যাচাই করে দেখা উচিত। বাংলাদেশে সরকার জন্ম সনদের তথ্য গুলো অনলাইনে ভেরিফিকেশন করার জন্য একটা ওয়েবসাইট করে দিয়েছে। এখনা থেকে যে কেউ যে কোন সময় তার জন্ম সনদের তথ্য গুলো যাচাই করে নিতে পারবেন। এর আরেকটা বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বর্তমানে অনেক অফিসিয়াল কাজেই এখন আর পুরনো হাতে লেখা জন্ম সনদ গ্রহণ করা হয় না। সবাই নতুন অনলাইন কপি দিতে বলে। সেক্ষেত্রে আপনার অনলাইন কপিতে যে তথ্য থাকবে তা মূলত সার্ভারে যে ভাবে তথ্য আপলোড করা হয়েছে হুবহু ওইরকম ভাবে। আপনার হাতে থাকা পুরনো কার্ড দেখে অনলাইন কপি করা হবে না। এখন ধরুন, অনেকেরই এমন হয় যে হাতে লেখা কার্ডটা হয়তো ঠিক আছে কিন্তু যখন অনলাইনে তথ্য গুলো এন্ট্রি করা হয়েছিল তখন হয়তো ভুল তথ্য এন্ট্রি করা হয়েছে। কারণ কি তা প্রথমেই বলেছি। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার অনলাইন কপিটিও ভুল তথ্য নিয়ে বের হবে। তাই সবার উচিত অনলাইনে এন্ট্রি করা ডাটা ঠিক মতো দেয়া হয়েছে কিনা যাচাই করে দেখা। যদিও আপনি ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র থেকে অনলাইন কপি নিয়ে আসতে পারবেন। তবে তা সময়ের ব্যাপার এবং আপনাকে গিয়ে আনতে হবে। আপাদত শুধু তথ্য গুলো ঠিক মতো এন্ট্রি করা হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে আমার এই টিউটোরিয়ালটি দেখতে পারেন। ভিডিওতে আমি উদাহরণ স্বরুপ একটি জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ব্যবহার করে সরাসরি কিভাবে অনলাইন থেকে ভেরিফিকেশন করতে হয় তা দেখিয়েছি। পদ্ধতিটি খুবই সহজ এবং যে কেউ চাইলেও এটা করতে পারবেন। ভিডিওটি দেখুন এখান থেকে।
অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে এই লিংকে প্রবেশ করুন: Online Birth Registration Certificate Verification
আপনি যদি ভেরিফিকেশন করতে গিয়ে দেখেন যে আপনার তথ্য গুলো দেখাচ্ছে না কিংবা তথ্য ভুল আছে তাহলে অবশ্যই আপনার ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করুন। তারা আপনাকে পরবর্তী কি পদক্ষেপ নিতে হবে তা জানিয়ে দিবে।
আশা করছি ভিডিওটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভিডিও সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভেরিফিকেশন করতে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে আমাকে কমেন্টে করে জানাতে পারেন। এরকম আরো ভিডিও পেতে আমাদের চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন। পাশাপাশি প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়গুলো সহজে জানতে আমাদের ব্লগটি নিয়মিত পড়ুন। ধন্যবাদ।